![](https://www.prottashaprotidin.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করে বয়স্কভাতার সুবিধাভোগ করে আসছেন উপজেলার ৩১৩ জন বয়স্ক ব্যক্তি। ডিজিটাল নিয়মে ডাটাবেজ করতে গিয়ে মূল এনআইডির সাথে মিলছে না বয়স। এখানেই বেঁধেছে জটিলতা। দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে বয়স্কভাতা পেলেও এখন বাদ পরার খবরে হতাশ হয়ে পড়েছেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া অনেকে।
বড়াইল ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামের আমিনুর ইসলামের অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছিলাম। (বহি নং ৩১৩২) এতোদিন পরে জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স কম হওয়ায় স্থগিত করা হচ্ছে বয়স্ক ভাতার কার্ড। মাথার চুল পেকে সাদা হয়েছে। ছেলেমেয়েরাও দেখেছেন নাতি-নাতনীর মুখ। তার কাগজ-পত্রের এসব ভুলের দায়িত্ব কে বহন করবে ?
এ দিকে এমন ভুলের কারণে বয়স্কভাতা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন উপজেলার কয়েক শত বৃদ্ধ বৃদ্ধা। উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে পাওয়া, এদপ্তরের আওতায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ বয়স্কভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৩৪৩ জন। বর্তমানে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছর ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬২ বছর বয়স হলে বয়স্কভাতা পাওয়ার যোগ্য হবেন। বর্তমান ভাতাভোগীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার লক্ষে ডিজিটাল ডাটা এন্ট্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করে বয়স্কভাতা সুবিধাভোগ করে আসছিল উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের ৭৭ জন, বড়াইলের ৭৬ জন, মামুদপরের ৪৮ জন, বড়তারা ৪১ জন, তুলশীগঙ্গা ৩৯জন, ক্ষেতলাল পৌরসভার ৩৩ জন মোট ৩১৩ জন ব্যক্তির বয়সের অসঙ্গতির কারনে তাদের বই স্থগিত করেছেন কর্তৃপক্ষ।
বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দীন বলেন, এক সময় আনুমানিক ৫৭ বছর বয়স হলেই বয়স্ক ভাতার সুবিধা পেতেন। তৎকালিন সময়ে সেনাবাহিনী দ্বারা জাতীয় পরিচয় পত্রের কাজ করায় কিছু অসচেতন ব্যক্তি ভুলবসত তাদের বয়স কমদেয়ায় বর্তমান এজটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বয়স্কভাতা ভোগীর কার্ড বাতিল হওয়া পরিবারের অন্য সদস্যের বয়স হলে তাদের নামে কার্ডটি পরিবর্তন করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করছি।
ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল বলেন, সম্প্রতি সরকার বয়স্কভাতা প্রাপ্তদের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নামের তালিকা ডাটাবেজের মাধ্যমে কম্পিউটারাইজড করার নির্দেশ দেয়। সে মতে বয়স্কভাতা প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের নামে কম্পিউটারে ডাটা এন্ট্রির সময় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নং দিলে এসব তথ্য বের হয়ে আসছে। সে ক্ষেত্রে বয়স কম থাকায় তাদের নাম কম্পিউটার ডাটাবেজে এন্ট্রি হচ্ছে না।
বৃদ্ধা মিছিরন বেওয়া বলেন, বয়স কম দেখিয়ে দুই সপ্তাহ আগে আমার বয়স্কভাতার বইটি নিয়ে গেছে। ভাতার টাকা না পেলে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে। বয়স্ক ভাতা অথবা বিধবা ভাতা যেকোনো একটা চান তিনি।
সমাজসেবা অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সকল বয়স্কভাতা ভোগীদের বই ফেরত নেয়া হয়েছে। সবগুলো কম্পিউটারে এন্ট্রি করা হলে বয়সের অসঙ্গতির কারণে প্রায় ৩১৩ জন সুবিধাভোগী বয়স্কভাতা স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাদের অফিসিয়াল কাজ চলছে, তাই এরই মধ্যে বয়স সংশোধন করে যদি তারা নতুন এনআইডি কার্ড জমা দিতে পারেন তবে তারা বয়স্ক ভাতা পাবেন। যারা ব্যর্থ হবেন তাদের স্থলে সেই পরিবারের বয়স্ক অন্য কেউ যাতে বয়স্ক ভাতা পান সে চেষ্টা করা হবে।
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক প্রত্যাশা প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না। |