মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোষ্য সনদে সরকারি প্রাথমিকে চাকুরি

321
মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোষ্য সনদে সরকারি প্রাথমিকে চাকুরি
মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোষ্য সনদে সরকারি প্রাথমিকে চাকুরি

ছামিউল ইসলাম হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে তথ্য গোপন করে পোষ্য সনদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরি করার অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় উপ-পরিচালক রংপুর, মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা, চেয়ারম্যান দূনীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়সহ প্রায় ১৫টি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন আতিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তি।

সহকারী ওই শিক্ষকের নাম সাহেলা আকতার। তিনি উপজেলার হরিনাথপুর (হাঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

অভিযোগে জানা গেছে , সাহেলা আকতার ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ১ তারিখে একই উপজেলার শাল্টিমুরাদপুর গ্রামের মো.বাইছারুল হক নামে এক ব্যক্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে তিনি বিবাহের তথ্য গোপন করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে ১৬ তারিখে তৎকালিন উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি পোষ্য সনদ গ্রহণ করেন। সেই সনদে ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন করে পরীক্ষার মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষার জন্য উর্ত্তীণ হন এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান।

সেই সময় গ্রহণকৃত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কতৃক পোষ্য সনদ পত্রে উল্লেখ করা হয়। নবাবগঞ্জ উপজেলাধীন লক্ষীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব প্রধান শিক্ষক মৃত আবুল কালাম আজাদ এর মেয়ে সাহেলা আক্তার, গ্রামঃ ভাদুরিয়া বাজার, নবাবগঞ্জ,দিনাজপুর। সে উক্ত শিক্ষকের একজন কন্যা ও পোষ্য। সে বর্তমানে অবিবাহিত।

কিন্তু ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিদ্যালয় শাখা-২  প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা একটি গেজেট প্রকাশ করেন। সেখানে ৮নং অনুচ্ছেদ (৩) নং উপ-বিধি(২) এর দফা (গ) তে উল্লেখিত মহিলা পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্যকোন বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোন বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকিলে উক্ত কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করিতে হইবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা-এই বিধিতে পোষ্য অর্থ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োজিত আছেন বা ছিলেন এমন শিক্ষকের অবিবাহিত সন্তান, যিনি উক্ত শিক্ষকের উপর সম্পূর্ণ রুপে নির্ভরশীল আছেন বা তিনি জীবিত থাকিলে বা চাকুরীতে থাকিলে সম্পূর্ণরুপে নির্ভরশীল থাকিতেন এবং  উক্ত শিক্ষকের বিধবা স্ত্রী বা বিপত্নীক স্বামী বা তালাক প্রাপ্ত কন্যা যিনি উক্ত শিক্ষকের  উপর সম্পূর্ণরুপে নির্ভরশীল ছিলেন বা,ক্ষেত্রমত, তিনি জীবিত থাকিলে অনুরুপভাবে নির্ভরশীল থাকিতেন।

এ বিষয়ে বারবার সাহেলা আক্তারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রেজাউল করিম  বলেন, ‘ইতোমধ্যে সহকারি শিক্ষক সাহেলা আকতারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে পোষ্য সনদ গ্রহনের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দুইজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা.নাজমুন নাহার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিবেন। সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন,‘সহকারী শিক্ষিকার পোষ্য সনদের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়াও ওই অভিযোগটি বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়েছে। আমি নিজেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক প্রত্যাশা প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।