চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে এসে লাশ হয়ে ফিরল কলেজ ছাত্র

268

ফারমান আলী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:-  নওগাঁয় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে হামিম হোসেন নামের একজন কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান আসামী বখাটে আসিফ হোসেন সজল নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের পারিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদরের উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হামিম হোসেন রাজশাহী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও প্রাণ কোম্পানিতে চট্টগ্রামের চাকুরি করেন।

সোমবার চট্টগ্রাম থেকে নওগাঁয় চাচাতো ভাই সাব্বির রহমানের বিয়েতে আসেন। এর ওই দিন দুপুরে নওগাঁ শহরের রুবির মোড়ে হামিমের প্রেমিকা আনিসা আনির সাথে দেখা করতে যায়। শহরের চকমুক্তার এলাকার বাসিন্দা ও নওগাঁ সরকারি মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল মোজাম্মেল হক এর ছেলে আসিফ হোসেন সজল (২৯) নেতৃত্বে তার সহযোগি মো. সুরুজ (২৬), প্রান্ত হোসেন (২৭)সহ অজ্ঞাত আরও ৫জন মিলে মারপিট ও ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

এরপর নির্যাতনকারীরা নিজেরাই হামিমকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। এর পর হাসপাতাল থেকে হামিমের পরিবার কে বিষয়টি জানালে পরিবারে লোকজন হাসপাতালে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গুরুত্বর হামিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী নিয়ে যেতে বলেন। পরে পরিবারের সদস্যরা হামিমকে রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মারা যান।

নিহত হামিম হোসেন এর পিতা শাহাদত হোসেন বলেন, আমার ভাতিজার বিয়ের অনুষ্টানে এসেছিল আমার ছেলে । আনিসা আনি নামে একটি মেয়ের সাথে আমার ছেলে দেখা করতে যায় শহরের রুবির মোড়ে।

এসময় আমার ছেলেকে বখাটে আসিফ হোসেন সজলসহ কয়েক জন মিলে ইট ও লাঠি দিয়ে নির্মূমভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে আমার ছেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারাই আমার ছেলেটাকে হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে চলে যায়।

এর পর হাসপাতালের একজন কর্মী ফোন দিলে আমরা দ্রুত চলে যাই হাসপাতালে। তারপর হাসপাতালের ডাক্তার জানান প্রচন্ড রক্তক্ষরণ ও শরীরের অনেক স্থানে মারাত্বক জখম হয়েছে। এর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে আমার ছেলে মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় মামলা করেছি। আমি আমার ছেলেকে হত্যার কঠিন শাস্তি দাবি করছি। আর যেন কোন বাবা- মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, উল্লেখিত ঘটনায় নিহত হামিম হোসেন এর পিতা দুপুরে তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আর ৫নামের মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে প্রধান আসামী আসিফ হোসেন সজলকে শহরের চকমুক্তার এলাকা থেকে আটক করেছে। অন্য আসামীদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।

ওসি আরও বলেন, মূলত আনিসা নামের মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্কজনিত কারনে ব্যর্থ হয়েই বখাটে আসিফ হোসেন সজলের নেতৃত্বে হামিম এর উপর হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাটি ঘটার পর আনিসা নামের ওই মেয়েটি ও তার পরিবারের লোকজনও পলাতক রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক প্রত্যাশা প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।