আলীগ্রাম টু বালুকচড়া রাস্তাটি মরণ ফাঁদ, মিলেছে সংস্কারের আশ্বাস

285
আলীগ্রাম টু বালুকচড়া রাস্তাটি মরণ ফাঁদ, মিলেছে সংস্কারের আশ্বাস

রবিউল ইসলাম, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আলীগ্রাম টু বালুকচড়ার ২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মিলেছে সংস্কারের আশ্বাস। এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জের আলীগ্রাম ও বালুকচড়া গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে বছরের পর বছর পুুকুরের পাড় না বাঁধার কারণে এলজিইডি’র রাস্তা ভেঙ্গে পুকুরের সাথে মিশে গিয়েছে। এতে করে তিন গ্রামের গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াতের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের সংসারদিঘী টু বুড়িগঞ্জ সড়কটিতে স্বাধীনতার পর থেকে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আলীগ্রাম টু বালুকচড়া ঐ রাস্তায় একাধিক পুকুর থাকায় রাস্তাটি মাঝে মধ্যেই ভাঙ্গনের শিকার হয়। স্থানীয় পুকুর মালিকরা ভাঙ্গা রাস্তাটি সংস্কার করলেও বালুকচড়া গ্রামের এলজিইডি’র রাস্তাটি এলাকার কথিত প্রভাবশালী আব্দুল মতিন ও তার চাচাতো ভাই ফজলু মিয়া কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই পুকুর পাড় বছরের পর বছর সংস্কার করেনি। এর ফলে ঐ স্থানে এমন ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। এ দূর্ভোগের কারণে আলীগ্রাম, সংসারদীঘি ও বালুকচড়া গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

আলীগ্রামের বাসিন্দা শাহীন ও আবুল কালাম বলেন, আলীগ্রামে একটি আলিম মাদ্রাসা ও একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, এখানকার শিক্ষার্থীরা রাস্তা খারাপের কারণে বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করতে পারেনা। ঐ এলাকার বাসিন্দা রফিকুল বলেন, পুকুরের পাড় না বাঁধার কারণে ১০ফিট রাস্তাটি ২ ফিটে পরিণত হয়েছে, এর ফলে ঐতিহাসিক বুড়িগঞ্জ হাটে কেনাবেচার জন্য কামতাঁরা হয়ে ঘুড়ে যেতে হয়।

এলাকাবাসী আরও জানায়, রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে আলীগ্রাম, বিহার ও সংসারদীঘি গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে খুব বিপাকে পড়ে, ফলে ৫কিলোমিটার ঘুরে বুড়িগঞ্জ হাটে কষ্ট করে কাঁচামাল নিয়ে যায়। অত্র গ্রামের কৃষক সেলিম, একরাম হোসেন, তোতা মিয়া, জাহিদুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলামসহ আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তি আশংঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে মাঝে মধ্যেই ঐ স্থানে দূর্ঘটনা ঘটে, আমার গ্রামবাসী রাস্তা রক্ষার জন্য বাঁশ খুঁটি সংগ্রহ করে নিয়ে সংস্কার করতে চাইলেও পুকুর মালিক ও পুকুর ইজারদার পুকুরটির পানি শুকিয়ে দেয়নি।

ইতিপূর্বে একই গ্রামে সাখাওয়াত এর ছেলে রব্বানী (২), আজিমুল এর ছেলে সজিব (১০), তাজুল ইসলাম এর মেয়ে তামিম (৫), সালেহা (৬৫) এই পথে যেতে তারা আহত হয় বলে এলাকাবাসী বলেন। স্থানীয় কৃষকরা আক্ষেপ করে বলেন, আমারা ধান, আলু ও চাল বুড়িগঞ্জ হাটে নিয়ে যেতে প্রতি বস্তায় ভাড়া লাগতো পাঁচ টাকা কিন্তু বর্তমানে এক বস্তায় ৩০-৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়, এর ফলে আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হচ্ছি।

এ ব্যাপারে বুড়িগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মন্ডল বলেন, ইতিপূর্বে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ততোধিকবার অবহিত করেছি কিন্তু কোন সুফল পাইনি, পাশাপাশি পুকুর মালিকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো তারা কেন এমন কাজ করেছে। এ ব্যাপারে পুকুর মালিক আব্দুল মতিনগং বলেন, পুকুরটি বর্তমানে সন পত্তনি দেওয়া হয়েছে, পানি শুকালে রাস্তা মেরামতের চেষ্টা করবো।

উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুল ইসলাম বলেন, এলজিইডি’র এই সড়কটির পার্শ্বে গভীর করে পুকুর খনন করার অভিযোগ পেয়েছি, তবে সরেজমিনে দেখে রাস্তা সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলে ঐ ২কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের দ্রুত উদ্দ্যােগ নেওয়া হবে।

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক প্রত্যাশা প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।