আল্লাহ কেন এত নবী আর ধর্মগ্রন্ধ পাঠিয়েছিলেন?

531

ইসলামি ডেস্কঃ মানুষ সুযোগ ফেলেই ফাঁকি মারে। ছাত্র বয়সেও, দৈনন্দিন জীবনেও। কেন সেটাও আরেক গল্প। অন্য একটা লেখায় বিশদ আলোচনা করবো। মানুষ সুযোগ পেলেই তার প্রভুকে ভুলে যেত, ভুলে যেত কি উদ্দেশ্যে তাদের পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। আল্লাহ বার বার নানা জেনারেশনে, নানা গোত্রের মানুষের কাছে তার বাণী পাঠিয়েছিলেন। নবীরা ছিলেন মাধ্যম। ৬০০০ বছর ধরে প্রভূত মানব উন্নয়নের চরম শিখরে আমরা এই মূহুর্তে আছি। এই পর্যায়ের জ্ঞান ভান্ডার, বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা আসতে হাজার হাজার বছর লেগে গেছে। কিন্তু ভেবে দেখুন একদম প্রথম দিককার মানুষগুলোর কথা। তাদের বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত ছিল। তাই তাদের কাছে পাঠানো গ্রন্ধগুলোও খুব সীমিত পর্যায়ের ছিল।

যেন সেসময়ের মানুষের কাছে কঠিন না হয়ে যেত। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তাই তিনি জানেন কোন জেনারেশনের মানুষ কতটুকু নিতে পারবে। কিন্তু ৬০০০ বছরে মানুষের সংখ্যাও বিশ্বব্যাপী এত বেড়ে গেল। ভেবে দেখুন মাত্র দু’জন থেকে এখন প্রায় ৭ বিলিয়ন – ব্যাক্টেরিয়ার চেয়ে কোন অংশে কম আমরা বংশবিস্তার করিনি! আল্লাহ এসবই জানতেন। তাই, ১৪০০ বছর আগে অসাধারন ক্যারিশম্যাটিক একজনকে সর্বশেষ রাসূল হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, যাও এখন থেকে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমার যে বাণী ভ্যালিড থাকবে সেটা প্রচার করে এসো। তিনিই ছিলেন মুহাম্মাদ (সাঃ) এবং তার ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল ‘কোরআন।’ কোরআন চিরকালের জন্য সমস্ত মানবজাতির কাছে এসেছে, অন্য গ্রন্ধগুলোর মত কোন বিশেষ সময় বা গোত্রের মানুষের জন্য আসেনি।

কিন্তু যাদের কাছে এই সহজ যুক্তিটা গ্রহনযোগ্য হয়নি এবং কোরআনকে শেষ বাণী হিসেবে গ্রহন না করে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্ধ আকঁড়ে ছিল, তারা রয়ে গেছে সময়ের সাথে ইসলামের ইনভ্যালিড হয়ে যাওয়া অংশগুলোতে। যারা এখনও তাওরাত অনুসরণ করে তারা ইহুদি নামে পরিচিত, যারা ইঞ্জিল তারা খ্রীষ্টান। কিন্তু এই ধর্মগ্রন্ধগুলোকে মানুষ নিজ প্রয়োজনে এতটাই পরিবর্তন করেছে যে মূল গ্রন্ধগুলো আর নেই। কিন্তু কোরআনের একটা বিরাট মিরাকল হল, আল্লাহ প্রতিজ্ঞা করেছেন আমাদের কাছে যে এটার পরিবর্তন হয়ে যাওয়া রক্ষার দায়িত্ব তিনি নিজে নেবেন। এজন্যেই দুনিয়াজুড়ে কয়েক মিলিয়ন কোরআন হাফেজ আছেন, যারা কোরআনের প্রথম শব্দ থেকে শেষ শব্দ পর্যন্ত মুখস্ত করে আসছেন গত প্রায় ১৪০০ বছর ধরে। সম্পূর্ণ অন্ধের মত ইউরোপের একজন কোরআন হাফেজকে পছন্দ করে নিয়ে আসবেন, আমেরিকা থেকে একজন, বাংলাদেশ থেকে, তাদেরকে তিনটি আলাদা রুমে রেখে কোরআন লিখে দিতে বলবেন, তারা কোরআনের ৬৩৪৬টি বাক্য (বা আয়াত) আপনাকে প্রথম শব্দ থেকে শেষ শব্দ পর্যন্ত হুবহু লিখে দেবে, তাদের মাতৃভাষা যেটাই হোক না কেন, তারা যেকোন শিক্ষাস্তর থেকেই আসুক না কেন। পৃথিবীর সব কোরআনের আরবি কপি হুবহু এক।

“আমি আপনাকে (হে মুহাম্মাদ) সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদদানকারী (যারা ইসলামের পথে থাকবে তাদের প্রতি) ও সতর্ককারী (যারা ইসলাম গ্রহণ করবেনা তাদের প্রতি) হিসেবে। এমন কোন সম্প্রদায় ছিল না যাদের কাছে সতর্ককারী পাঠানো হয়নি।” (আল-কোরআন ৩৫:২৪)

সবচেয়ে মজার বিষয় হল, কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্ধ যেখানে আল্লাহ মনোনিত ধর্মকে ‘ইসলাম’ বলা হয়েছে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের সম্পর্কেও বিশদ আলোচনা হয়েছে। অন্য কোন ধর্মেরগ্রন্ধে তাদের ধর্মের মান বল হয়নি, বা অন্য ধর্ম নিয়েও আলোচনা করা হয়নি।
যেখানে আমাদের সৃষ্টিকর্তা নিজেই সবকিছু বলে দিয়েছেন, সেখানে কাকে বিশ্বাস করবো কাকে করবো না, এসব কারন দেখিয়ে ইসলাম থেকে দূরে থাকার কোন যুক্তি নেই।
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক প্রত্যাশা প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।